লালমনিরহাটে প্রতি বছর কৃষি জমি দখল করে গড়ে উঠছে নতুন নতুন ইটভাটা। ভাটার আগ্রাসনে হারিয়ে যাচ্ছে তিন ফসলি জমি। ফলে দিনের পর দিন উৎপাদন কমছে খাদ্য উদ্বৃত্ত এই লালমনিরহাট জেলায়।
জানা যায়, লালমনিরহাট জেলার মোট ১লক্ষ ২৪হাজার ৯৩হেক্টর জমির মধ্যে ১লক্ষ ১হাজার ৫শত ৯৬হেক্টর কৃষি জমি হিসেবে চিহ্নিত। এর মধ্যে অতি ঊর্বর তিন বা অধিক ফসলি জমির পরিমাণ ৯৮হাজার ৮শত ৭৫হেক্টর।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, প্রতি বছর এ কৃষি জমিতে উৎপাদিত খাদ্যশস্য লালমনিরহাট জেলার বার্ষিক চাহিদা পূরণ করেও উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য অন্যান্য জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
সূত্র জানায়, লালমনিরহাট জেলার ৫টি (লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা, পাটগ্রাম) উপজেলায় বর্তমানে প্রায় অর্ধশতাধিক ইটভাটা রয়েছে। প্রতি বছরই বাড়ছে ভাটার সংখ্যা। আর এসব ইটভাটার বেশির ভাগই স্থাপন করা হচ্ছে ফসলি জমি বা এর পাশ ঘেঁষে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, কৃষি বিনষ্টের অন্যতম প্রধান কারণ ইটভাটা। বিগত এক দশকে লালমনিরহাটের অতি ঊর্বর তিন ফসলি ৯৮হাজার ৮শত ৭৫হেক্টর কৃষি জমির মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় গড়ে উঠা প্রায় অর্ধশতাধিক ভাটা প্রত্যক্ষভাবে ধ্বংস করেছে কৃষি জমি। এছাড়া ভাটার দূষণ ও বিরুপ প্রভাবে আশপাশের জমির ফসলহানি হচ্ছে।
আরও জানা যায়, কৃষি বিভাগ থেকে কোনো প্রকার ছাড়পত্র ছাড়াই কৃষি জমিতে ইটভাটা গড়ে উঠছে।
পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ভূমি জোনিং অ্যাক্ট-২০১০, কৃষি জমি সুরক্ষা আইন-২০১৫, পরিবেশ সুরক্ষা আইন-১৯৯৫, ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নীতিমালা-২০১৩ সবই লংঘিত হয়েছে লালমনিরহাট জেলার ইটভাটা স্থাপনের ক্ষেত্রে।